নিবন্ধন পাচ্ছে না বিএনএফ

সমকাল প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) নিবন্ধন পাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া শর্ত পূরণ করতে না পারায় বিএনএফকে রাজনৈতিক নিবন্ধন দিচ্ছে না ইসি। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময় দিলেও তারা শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে বিএনএফকে ইসিতে নিবন্ধিত করা হচ্ছে না বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। আজকালের মধ্যে বিএনএফের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।
ইতিমধ্যে দু’জন নির্বাচন কমিশনার আইন অনুসারে দলটির নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের লিখিত মতামত জানিয়েছেন। কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট
শাখা থেকে রোববার আইনের বিভিন্ন ধারা উল্লেখের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদনও উত্থাপন করা হয়েছে।
তবে বিএনএফের প্রধান সমন্বয়কারী এসএম আবুল কালাম আজাদ বলছেন ভিন্ন কথা। শর্তপূরণ হয়নি কমিশনের এ তথ্যে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটা হতেই পারে না। কমিশনের প্রদত্ত সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে। আমি শতভাগ আশাবাদী বিএনএফ নিবন্ধন পাবে। নবগঠিত রাজনৈতিক দল বিএনএফের নিবন্ধন না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার দু’দফা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে দেখা করে এ আপত্তি জানান। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বিএনপিকে ভাঙার লক্ষ্যে নতুন এ দলটির নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির আদলে বিএনএফ গঠন করা হয়েছে।
২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনে বলা হয়েছে, নিবন্ধন পেতে হলে ১. একটি দলকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনো নির্বাচনে অন্তত একটি সংসদীয় আসন পেতে হবে, অথবা ২. যে কোনো একটি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ওই আসনে প্রদত্ত মোট ভোটের ৫ শতাংশ পেতে হবে, অথবা ৩. দলের একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে, দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ ২১টি প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা কমিটি থাকতে হবে এবং অন্তত ১০০ উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রামাণিক দলিল থাকতে হবে।
ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা সূত্র জানিয়েছে, ২১টি প্রশাসনিক জেলা ও ১০০টি উপজেলায় দলের নিজস্ব কার্যালয় থাকার শর্ত থাকলেও সে ক্ষেত্রে একাধিকবার সময় বাড়ানো হলেও শর্ত পূরণ করতে পারেনি বিএনএফ। দলটির বিষয়ে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে মাঠ পর্যায়ের রিপোর্ট ইসির হাতে এসে পেঁৗছেছে। মাঠ পর্যায়ের যে রিপোর্ট প্রস্তুত হয়েছে সে অনুযায়ী দলটির ২৬ জেলা ও মাত্র ৮৮টি উপজেলায় দলীয় কার্যালয়ের অস্তিত্ব ও কর্মকাণ্ড খুঁজে পাওয়া গেছে। এছাড়াও দু’শ’ ভোটারের সমর্থনে প্রামাণিক দলিলেও ত্রুটি পেয়েছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, যে দলগুলো নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল তার মধ্যে শুধু বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট নিবন্ধন শর্ত পূরণ করেছে। বিএনএফ তাদের শর্ত পূরণ করতে পারেনি। আর শর্ত পূরণ না করায় আইন অনুযায়ী শেষ পর্যন্ত বিএনএফ নিবন্ধনবঞ্চিত হতে পারে। ইতিমধ্যে বিএনএফকে নিয়ে মাঠ পর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।