-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে শুক্রবার পুনর্মিলনীতে এসে হাসি-গান-আড্ডায় সময় কাটান ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীরা
স্মৃতিতে জমে থাকা ধুলো যেন সরে গেল এক লহমায়; নানা সময়ের মুখগুলো এক হল, ফিরে গেল সোনালি সেই দিনগুলোতে; বুক ভরে উঠল একাধারে ৩০তম বার এক হওয়ার গর্বে।
এই আনন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের; এই গর্ব ওই বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা অ্যালামনাই সোসাইটির (ইডাস)।
পিছু ফেলে আসা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনা না গেলেও তার স্বাদটুকু দিতে প্রতি বছরই পুনর্মিলনীর আয়োজন করে ইডাস, এবার ছিল তার ৩০তম আয়োজন।
বরাবরের মতোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সবুজ প্রাঙ্গণে বর্ণিল আয়োজনে সঙ্গী হয়ে ফিকে হয়ে আসা জীবন পাশে রেখে সবুজ দিনগুলোতে ফিরে গেলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সেই ১৯৫৫ সালে বিভাগের চৌহদ্দিতে বিচরণ করা বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন মাত্র কয়েক বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে আসা ব্যক্তিরাও।
ছুটির দিন শুক্রবার শীতের পড়ন্ত বিকালে পিঠা-পুলি আর চায়ের কাপে আড্ডায় মজে ওঠেন সবাই; হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের দেখা পেয়েই জড়িয়ে ধরে ‘অ্যাই কী খবর বল’ আর মোবাইল ক্যামেরায় ‘ক্লিক ক্লিক’; রাত পর্যন্ত উচ্ছ্বাসেই কাটল সবার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগ ইংরেজির প্রায় ৯৫ বছরের পথচলার মধ্যে ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বরে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গঠিত হয় ইডাস, এবার তার ৩০ বছর পূর্ণ হওয়ায় আয়োজনের ঘটাও ছিল বেশ।
প্রথম অনুষ্ঠানের স্মৃতি হাতড়ে অধ্যাপক আনোয়ারুল হক বলেন, “এ পরিবেশনার জন্যে সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ওই অনুষ্ঠানে একশ’ জনের বেশি আসেননি। আজ অনেক এসেছে; অনেক অবদান রাখছেন।”
টিএসসির প্রবেশ পথেই ছিল নিবন্ধনের ব্যবস্থা, আগতদের স্বাগত জানাচ্ছিল তরুণ-তরুণী। সবুজ চত্বরের এক পাশে মঞ্চ ছিল, মাঝখানে বসানো হয় কয়েকশ টেবিল। লনে ছিল পিঠা-ফুসকাসহ নানা খাবার।
মঞ্চের পাশে স্লোগান ছিল ‘ইয়েসটারডে ওয়ান্স মোর’। তার সঙ্গে ক্যালিগ্রাফিক বর্ণে লেখা হয় ‘গ্লোরিয়াস থার্টি ইয়ার্স’।

এবারের আয়োজনে স্মরণের কেন্দ্রে ছিলেন সদ্য প্রয়াত অধ্যাপক আহসানুল হক; স্মৃতিচারণে প্রায় সবার বক্তব্যে অ্যালামনাই সোসাইটি গঠনে তার অবদানের কথা স্মরণ করা হয়।
অধ্যাপক আনোয়ারুল হক বলেন প্রথম আয়োজনে প্রয়াত আহসানুল হককে নিয়ে ঢাকা কলেজের উল্টো দিকের দোকানপত্র থেকে জিনিসপত্র কেনার কথা।
গত ২ অক্টোবর প্রয়াত অধ্যাপক আহসানুল হকের স্মরণে একটি স্মৃতিকর্নারও রাখা হয় প্রাঙ্গণের এক পাশে। তার লেখা একটি কবিতাংশ ‘সবার বুকের ভেতরটাই’ দিয়ে একটি ফটোস্টোরি বোর্ডও ছিল সেখানে।
বিকাল পৌনে ৫টায় আনুষ্ঠানিকভাবে পুনর্মিলনীর বক্তৃতা ও সম্মাননা প্রদান পর্বের সূচনার শুরুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় অধ্যাপক আহসানুল হকের স্মরণে।
প্রয়াত অধ্যাপক আহসানুল হকের প্রেরণা ও তত্ত্বাবধানে ১৯৮৫ সালে ইডাসের ‘প্রদীপ জ্বলে’, বলেন এই সংগঠনের বর্তমান সভাপতি ওয়াজির সাত্তার।
“সে থেকে ৩০ বছর ধরে নতুন নতুন সদস্যদের অংশগ্রহণে আজ ইডাস পরিণত হয়েছে এক উজ্জ্বল মশালে। এখন আমাদের সদস্য সংখ্যা ৫০০ পেরিয়ে গেছে, আজীবন সদস্য দেড় শতাধিক। আমাদের কর্মপরিধিও বেড়েছে অনেক।”
ইডাস সাধারণ সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী সংগঠনের ৩০ বছরের পথচলায় বিভিন্ন জনের অবদান স্মরণ করেন।
সভাপতি ওয়াজির সাত্তার বলেন, “৩০ বছর মোটেই কম সময় নয়। যে ছেলেটি বা মেয়েটি ১৯৮৬ সালে জন্মেছিল সে আজ কোনো পেশায় নিয়োজিত, বিয়ে করেছে হয়ত, নিদেনপক্ষে একটি বাচ্চা তো থাকতেই পারে।
“কিন্তু আমাদের ইডাস- সে তো চির তরুণ। যেমন আমাদের ইংরেজি বিভাগ, তার বয়স প্রায় ৯৫ বছর। কিন্তু দারুণ তারুণ্য।”

দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালনের পর এবার নতুনদের হাতে ইডাসের নেতৃত্বভার দিতে সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান সাংবাদিক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
“টানা ১১ মেয়াদে নির্বাহী কমিটিতে ছিলাম আমি। এর মধ্যে ৫ মেয়াদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেছি। যথেষ্ট হয়েছে, এখন অবসরের সময়। নতুন নেতৃত্বও বিকশিত হওয়া দরকার।”
তবে চাইলেও পারেননি তৌফিক ইমরোজ খালিদী। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠনে সম্পাদকের দায়িত্বভার পালনে ফের তার উপরই ভরসা করেন ইডাস সদস্যরা, তবে সভাপতি পদে নতুন এসেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদ কে চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিভাগের ৬ প্রবীণ শিক্ষার্থী হোসনে আরা , অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক সদরুল আমিন, অধ্যাপক আনওয়ারুল হক, অধ্যাপক কায়সার হক ও অধ্যাপক নাফিসা জামালের হাতে সম্মাননা তুলে দেন অর্থমন্ত্রীসহ অতিথিরা।
সম্মাননাপ্রাপ্ত অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক নিয়াজ জামান, অধ্যাপক শওকত হোসেন ও অধ্যাপক কাশীনাথ রায় বিদেশে থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সম্মাননা নিয়ে অধ্যাপক হোসনে আরা হক বলেন, “আমার প্রতি সকলের এই আন্তরিকতা মনে রাখার মতো, এটা আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।”

এই সুযোগে শিক্ষক জীবনের প্রাথমিক অবস্থার কথা মনে করে তিনি বলেন, “আমাদের সময়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম ছিল, এ কারণে সবার সঙ্গে সংযোগটাও বেশি ছিল। প্রত্যেকের নাম ধরে ডাকতে পারতাম।”
অধ্যাপক কায়সার হক বলেন, “৭৫ বছর থেকে এই পর্যন্ত অনেক সময় পেরিয়ে এসেছি। এদিনে একটা কথা বলতে পারি, আমরা এই সময়টাতে অনেক আনন্দে ছিলাম।”
অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, “সম্মাননা নিয়ে মনে হচ্ছে আমার সময় পেরিয়ে গেছে। তবে আমি এখানে আসব, বারবার আসব, আমৃত্যু।”
সিনিয়র অ্যালামনাই হিসাবে সম্মাননা নিতে এসে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, “অধ্যাপক মনজুর বলেছেন, আমার সময় পেরিয়ে গেছে। তবে আমি বলব, আমি এখনও শুরুর অপেক্ষায় আছি।”
সেই সব দিনগুলো
অনুষ্ঠান শুরুর সময় ছিল বিকাল ৩টা; কিন্তু তার আগেই এসে হাজির হন অনেকে। কারণ অপেক্ষার তর সইছিল না, তাছাড়া পথে যানজটে পড়ে যদি দেরি হয়ে যায়, সেই শঙ্কাও ছিল।
বেলা আড়াইটায়ই ফৌজিয়া চৌধুরীকে পাওয়া যায় টিএসসি প্রাঙ্গণে, ১৯৭৬ ব্যাচের এই শিক্ষার্থী এসেছিলেন স্বামীকে নিয়ে।
ফৌজিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৪১ বছর পর এবারই প্রথমবারের মতো আসলাম। পুরনো অনেক বন্ধু বা সিনিয়র-জুনিয়রের সঙ্গে দেখা হবে বলে আশা করছি।”

অনুষ্ঠান শুরুর নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণের মধ্যে হাজির হন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তার আগেই এসে যান কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসানরা।
অর্থমন্ত্রী মুহিত বিকাল পৌনে ৪টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেই সবুজ চত্বরে পেরিয়ে সোজা চলে যান মঞ্চের সামনের প্রথম চেয়ারটিতে।
তাকে দেখে ছুটে আসেন অন্যরা। রামেন্দু মজুমদার ও হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন এগিয়ে গিয়ে বলেন, নিতে এসেছি।
“আপনি ভুল জায়গায় চলে এসেছেন, আড্ডার জন্যে সামনের টেবিলে যেতে হবে,” সহাস্যে বলেন রামেন্দু মজুমদার।
মুহিতও কম যান না। “আমি তো বসার জন্য এসেছি,” বলেই হেসে ওঠেন তিনি। পরে টেবিলের আড্ডায় যোগ দেন অন্যদের সঙ্গে, যারা সবাই বয়সে তার চেয়ে ছোট। ইডাস সাধারণ সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী অর্থমন্ত্রীকে অনুষ্ঠানে পেয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানান।

অর্থমন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি সময় পেলেই সব সময় এ অনুষ্ঠানে আসার চেষ্টা করি, আসি। খুবই ভালো লাগছে। অনেককে একসঙ্গে পাই, পুরনো-নতুনদের সঙ্গে দেখা যায়; কথা হয়। এটা বেশ ভালো উদ্যোগ।”
ততক্ষণে এ টেবিলে জড়ো হন আরও অনেকে; কেউ ছবি তুলছিলেন; কেউ কুশল বিনিময় করছেন। আসার মিছিলও ক্রমে বড় হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের ভারশ্বেরী হোমসে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে এক সঙ্গে পড়ার পর থেকে আজ অবধি বন্ধুত্ব ধরে রাখা মনিকা দেবী বড়ুয়া ও সাহারা বানু অনুষ্ঠানে আসেন একসঙ্গে। মনিকা দেবী ১৯৬৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও সাহারা বানু ভর্তি হন তার এক বছর পর। মিলন মেলায় এতে হাত ধরে ঘুরছিলেন তারা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সাহারা বানু বলেন, “পুরোনো স্মৃতি ঘুরে দেখছি আর কী!”

অনেক বছর বেসরকারি কলেজের ইংরেজির অধ্যাপনা শেষে অবসর জীবনযাপন করছেন সাহারা, আর সরকারি বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনার শেষে ভারতেশ্বরী হোমসের অধ্যক্ষের দায়িত্বেও ছিলেন মনিকা।
ছাত্রাবস্থায় ১৯৬৭-৭১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি তুলে ধরে মনিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ খুবই ভালো লাগছে, যেনো পুরনো স্মৃতি ফিরে পাচ্ছি; অনেককে দেখছি একসঙ্গে।
“ক্যাম্পাসের ওই সময়টা ছিল স্বর্ণযুগ। মধুর মুহূর্তগুলো আজ আবারও ভেসে আসছে স্মৃতির পাতায়।”
১৯৬৮-৭২ সময়কার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাহারা বানু ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধের কঠিন সময় ও রাজনৈতিক উত্তুঙ্গ অবস্থার কথা বলেন।
“পতাকা উত্তোলনের দিনের স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বল করছে আমার মনে।”
১৯৭৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাবেক রাষ্ট্রদূত আজিজুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভালো লাগছে, পুরনো মুখ, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা অন্যদের যেমন দেখার অপেক্ষায় থাকি; বিভাগের অনেকেই আমাদের অপেক্ষায় থাকেন। এ আয়োজন সে সুযোগ করে দিয়েছে। এ সেতুবন্ধন অটুট থাকুক সব সময়।”

পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার ফাঁকে সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই তো একটা অসাধারণ অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ ও দেখার সুযোগ হয়।”
কবি নুরুল হুদা এসেছেন কয়েক বছর পর; দেখা নেই অনেকদিন, এমন বন্ধুদেরও পেয়ে যান তিনি।
নির্বাচন কমিশন নিয়োগে গঠিত সার্চ কমিটির সদস্য হওয়া সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে কাছে পেয়ে ছিল অনেকের উচ্ছ্বাস; ছবি তোলার হিড়িক।

রাষ্ট্রপতির মনোনীত এই সার্চ কমিটির আরেক সদস্য মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মাসুদ আহমেদকে ঘিরেও ছিল ভিড়।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেককে পেয়েছি, আমাদের সদস্য সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। এটা খুব আনন্দের। আগামীতে এই আয়োজন বড় হতে থাকবে আশা করি।”
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানে এসে আমাদের বেশ আনন্দেই লাগে। পুরনো স্মৃতিগুলোই আমরা ফিরে পাই।”

ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শাহনাজ সুলতানার সঙ্গে পুনর্মিলনীতে আসেন সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদ, যিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়েছেন, তবে অন্য বিভাগে।
কায়সার হামিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা একটা অনন্য উদ্যোগ। পরিচিতদের অনেককে পাই; ভালো লাগছে।”
সাবেক শিক্ষার্থী কবি গুলকেতিন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ শুধু বন্ধুদের সঙ্গে থাকতে চাই। তাদের সঙ্গেই আড্ডা দেব।”

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাবেক অধ্যাপক সদরুল আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে, অনেক আনন্দ। নতুন পুরাতন তো আছেই, আমরাই জ্যেষ্ঠ; সবার সঙ্গে এ মেল বন্ধন, আড্ডায় প্রিয় পাঙ্গন মুখরিত হচ্ছে; খুবই উপভোগ্য।”
১৯৯৯ ব্যাচের মিনহাজ আনোয়ার ক্যাম্পাস থেকেই প্রতিটি পুনর্মিলনীতে যোগ দিয়ে আসছেন।
“প্রতিবছর এ দিনটির অপেক্ষায় থাকি; বন্ধুরা আসবে, পুরনোরা আসবেন। সবার সঙ্গে দেখা হবে। এটা একটা অন্যরকম আনন্দ।”
বিকাল থেকে শুরু হয়ে নানা কর্মসূচির মধ্যে সন্ধ্যা ৭টার পরেও চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপরই নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির ঘোষণা আসে; সাঙ্গ হয় মিলন মেলা, ফের আগামী বছরের আশা নিয়ে।
নতুন কমিটি
ইডাসের নতুন কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে নতুন কমিটির ঘোষণা দেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ ও বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক রুবিনা খান।
বিদায়ী সভাপতি ওয়াজির সাত্তার নতুন কমিটিতে রয়েছেন উপদেষ্টা হিসাবে।
নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ জুনাইদুল হক ও ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মজিদ।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন ও র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
অধ্যাপক রুবিনা খান কোষাধ্যক্ষ পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন।
কমিটিতে সদস্য পদে রয়েছেন- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, ব্যবসায়ী সৈয়দ সাদাকাত হোসেন, শাহাদাত হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আমিনুল ইসলাম খান, অধ্যাপক নেভিন ফরিদা, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের সেন্টার ফর ল্যাংগুয়েজ স্টাডিজের পরিচালক এ টি এম সাজেদুল হক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শাহীনুল হুদা জুয়েল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক মিয়া, অতিরিক্ত কর কমিশনার এম রফিকুল ইসলাম চৌধুরী. বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব আবদুস সামাদ আল আজাদ, ব্যাংকার নিলুফার রহমান, তাকাদ আহমেদ চৌধুরী, কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ আকিব জাভেদ, রাইসুল হাসান ইভান, ফাহিম দাদ খান রূপক ও ব্যবসায়ী সাবেরা আহমেদ কলি।